রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
স্বেচ্ছাসেবক লীগের র‌্যালি থেকে ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থী বেড়েছে ৩ গুণ, ঋণগ্রস্ত এক-চতুর্থাংশ: টিআইবি সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার শহীদ ২ দিনের রিমান্ডে ‘গ্লোবাল ডিসরাপ্টর্স’ তালিকায় দীপিকা, স্ত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রণবীর খরচ বাঁচাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী জেরুসালেম-রিয়াদের মধ্যে স্বাভাবিককরণ চুক্তির মধ্যস্থতায় সৌদি বাইডেনের সহযোগী ‘ইসরাইলকে ফিলিস্তিন থেকে বের করে দাও’ এসএমই মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইরান ২ সপ্তাহের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র বানাতে পারবে!

সবার চোখ সংলাপে

স্বদেশ ডেস্ক::

নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য আগামীকাল সোমবার থেকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসতে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। প্রথম দিন সংলাপ হবে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে। বিএনপি ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ‘অর্থহীন’ সংলাপে যাবে না। কয়েকটি দল রয়েছে সিদ্ধান্তহীনতায়। এ অবস্থায় সংলাপ কতটুকু অর্থবহ হবে, সবাই এখন সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান আমাদের সময়কে বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নিলে যা হবে, অংশ না নিলেও তাই হবে। আমাদের সংলাপের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়।’ সাবেক এই আমলা আরও বলেন, ‘আমরা ইসি গঠনে আইন করার কথা বলে আসছি। আইনের খসড়া করে দিয়েছি; সরকার তা আমলে নিচ্ছে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের বাইরে সুশীল প্রতিনিধি বা অন্য কোনো গোষ্ঠীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা, জানি না। আমাদের সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানালে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ পেলেও সংলাপে অংশ নেব না।’

জানা গেছে, গতবারের মতো এবারও নিবন্ধিত ৩১টি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে। দেশের দুই বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি গতকাল পর্যন্ত সংলাপের আমন্ত্রণ পায়নি। সংলাপের মাঝামাঝিতে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমার জানামতে আওয়ামী লীগ এখনো আমন্ত্রণপত্র পায়নি। তবে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের কাছে আমন্ত্রণপত্র গেছে কিনা, আমার জানা নেই।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এখনো সংলাপের আমন্ত্রণ পাইনি।’ তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অতীতে রাষ্ট্রপতির ডাকে সংলাপে গিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোনো সংলাপেই জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। এগুলো সম্পূর্ণ লোকদেখানো এবং আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। রাষ্ট্রপতির সংলাপে আমরা গতবারও গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে দেখা গেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। আওয়ামী লীগের পছন্দের দলীয় লোকদের দিয়েই কমিশন হয়েছে, যার খেসারত দিচ্ছে গোটা জাতি। নির্লজ্জ ও দলকানা কমিশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ধ্বংস করেছে। কাজেই আমাদের মূল অবস্থান হচ্ছে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তার পরও রাষ্ট্রপতির চিঠি পেলে আমরা দলীয় ফোরামে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানাব।’

এদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু আমাদের সময়কে বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেবে। আমাদের প্রস্তাবের বিষয়ে রবিবার (আজ) দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

২২ ডিসেম্বর সংলাপে অংশ নেবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), যারা ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের সদস্য। দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতারের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বসবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আমাদের সময়কে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ক্ষমতাসীন জোটের অন্যান্য দল গতকাল পর্যন্ত সংলাপের আমন্ত্রণ পায়নি। তবে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া আমাদের সময়কে বলেন, ‘এই সংলাপ অর্থহীন। তাই আমরা সেখানে যাব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আমন্ত্রণ পেলে কী প্রস্তাবনা দেবেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন আমাদের সময়কে বলেন, ‘সংলাপের অপেক্ষায় আছি। আমন্ত্রণ পেলে আমরা নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাব দেব।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া জানান, এখনো আমন্ত্রণ পাননি। তবে তিনি আমন্ত্রণের অপেক্ষায় আছেন। চৌদ্দ দলের শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বসর মাইজভান্ডারি বলেন, ‘চৌদ্দ দল শিগগিরই একটা আলোচনায় বসবে। আমন্ত্রণ পেলে কারা কারা যাবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সদস্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের প্রচার বিভাগের প্রধান আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমরা আমন্ত্রণ এখনো পাইনি। আমন্ত্রণ এলেও আমাদের যাওয়ার ইচ্ছে নেই। তবে আমন্ত্রণ এলে জোটের সব দলের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেব।’ সংলাপে গেলে আপনাদের প্রস্তাব কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত সিস্টেমের (ব্যবস্থা) বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। আমরা এখনো সে অবস্থানেই আছি।’

নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। এতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকসহ (সিএজি) ২-৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক থাকবেন।

২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে ইসি গঠনে সংলাপ শুরু করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক মাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলা ওই সংলাপ ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি শেষ হয়। সংলাপ শেষে সার্চ কমিটি গঠন করার পর সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সার্চ কমিটির কাজের সাচিবিক দায়িত্বও পালন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877